ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েল, যা “তরল সোনা” নামেও পরিচিত। হাজারও সমস্যার নিরাময়ে অলিভ অয়েল বহু শতাব্দী ধরে তার মান সংরক্ষণ করে চলেছে। তাছাড়া, ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলের রয়েছে ত্বকের নিবিড় বন্ধুত্বের পরিচয়।ত্বকের জন্য অলিভ অয়েলের উপকারিতা সম্পর্কে বিভিন্ন উৎস থেকে আপনিও নিশ্চয়ই অনেক কিছু শুনেছেন। তো চলুন আজকে আমরা আপনার জানার সাথে অলিভ অয়েলের উপকারীতাগুলো মিলিয়ে নিই। আপনি কি বলেন?

অলিভ অয়েল কিভাবে উৎপাদন করা হয়?

এটিকে অলিভ অয়েল বলা হলেও তবে এটি আসলে একটি ফলের রস। কি অবাক হচ্ছেন, ভাবছেন কীভাবে?
খাবারে ব্যবহৃত অন্যান্য তেলের ন্যায় অলিভ অয়েল কেবল মাত্র বীজ থেকে উৎপাদন করা হয় না। যা মূলত অলিভ ফল (জয়তুন ফল) এবং তার বীজ দুটোকে একত্রে প্রেস করে উৎপাদন করা হয়।অবশ্যই, এই জাতীয় ছোট ফল থেকে তেল উৎপাদন করার জন্য যান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তবে অবশ্যই এটি কোনও আধুনিক প্রক্রিয়ার অংশ নয়। অলিভ অয়েল প্রাচীন কাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনটি মৌলিক প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত হয়ে আসছে:টুকরে টুকরে করে ঘানি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রেস করে তৈল কে আলাদা করার মতো তিনটি মৌলিক প্রক্রিয়া। অতীতে এই কাজগুলো করার জন্য পশু কিংবা খালের পানির স্রোতে ঘুর্ণন যন্ত্র বসিয়ে প্রেসের কাজ এবং পরিস্কার কাপড় দিয়ে তৈল আলাদা করণ করা হতো।বর্তমানে অবিচ্ছিন্ন সিস্টেম নামক একটি আধুনিক পদ্ধতির সাহায্যে মানুষের স্পর্শ ছাড়াই আরও অনেক বেশি জীবাণুমুক্ত এবং উচ্চ মানের অলিভ অয়েল উৎপাদন করা হচ্ছে ।

অলিভ অয়েলে কি কি উপকরণ রয়েছে?

অলিভ অয়েলে কি কি উপকরণ রয়েছে?ধরুন আপনার ত্বকের সর্বোত্তম যত্ন দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ সূত্র প্রস্তুত রয়েছে। কি সেই বিশেষ সুত্র?বিশেষ সেই সুত্রটি হচ্ছে অলিভ অয়েল নিজেই। কারণ, এর মধ্যে ত্বকের যত্নের সকল উপাদন মওজুদ রয়েছে। আপনার ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকারী অ্যাসিডিটি ছাড়াও অলিভ অয়েলে রয়েছে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও অলিভ অয়েলে ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সালফার, আয়রন, তামা, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, মিনারেলের ন্যায় অতিব গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। এগুলি ছাড়াও কম কমডোজেনিক (পোর-ব্লকিং) স্তরের কারণে অলিভ অয়েল সকল ধরণের ত্বকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।

ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল এর গুণাবলি কী?

ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলের গুণাবলি লিখতে গিয়ে আমরা আবারও বুঝতে পেরেছি কেন অলিভ অয়েল এত কিংবদন্তী। এ সম্পর্কে আপনার সবচেয়ে ইন্টারেশটিং প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার সময় এটি!১. ময়শ্চারাইজিং: অবশ্যই, “ময়শ্চারাইজিং” কে আমরা অলিভ অয়েলের সর্বাধিক সুফল বলা য়া। কেননা, অলিভ অয়েলে থাকা শক্তিশালী ফ্যাটি অ্যাসিডগুলি সুক্ষভাবে ত্বকে প্রবেশ করে এবং ত্বককে গভীরভাবে ময়শ্চারাইজ করে।২. চর্মরোগের চিকিৎসা: এটি ত্বক ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং লালভাবের মতো গুরুতর সমস্যাগুলি প্রসমন ও দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।৩. ত্বকের দাগ দূরীকণ : অলিভ অয়েল, যা তার মধ্যে থাকা ভিটামিন ই এর সাহায্যে ত্বককে কোমল এবং নমনীয় করে, এটি সূর্যের দাগ এবং রঙিন স্তরের অসমতা দূর করতে খুব কার্যকর।৪. বয়সের চাপ দূরীকরণ: এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন ই রয়েছে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা যা উজ্জলতা পেতে কার্যকর সমাধান দেয়। যা বয়সের চাপ বুঝতেই দিবে না।৫. ব্রনের চিকিৎসা : অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি ছাড়াও, এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি প্রদাহের বিস্তার রোধ করে ব্রণ হ্রাসকে প্রভাবিত করে।৬. মেকআপ অপসারণে : অলিভ অয়েল, যা বিশেষত সংবেদনশীল ত্বকের জন্য একটি দুর্দান্ত মেক-আপ রিমুভার, মেক-আপন রিমুভ করার পর ত্বকে নরম অনুভূতি তৈরি হয়।৭. হাত, পা এবং দেহে ম্যাসেজ: অলিভ অয়েলযুক্ত ম্যাসেজের সাহায্যে হাত, পা এবং দেহে ক্লান্তি অপসারণ ক্লান্তি উপশম করার সময় একটি নরম এবং আর্দ্র অনুভূতি তৈরি করে। এছাড়াও, অলিভ অয়েলের তেলের উপকারিতা ত্বকের পাশাপাশি রক্ত ​​সঞ্চালনের ত্বরণে ভূমিকা রাখে।


অলিভ অয়েলের অতিরিক্ত ব্যবহারে কোনও অসুবিধা আছে কি?

হ্যাঁ, অলিভ অয়েল একটি অবিরাম নিরাময়ের একটি ভেষজ ঔষধ যা ত্বকের জন্য অগণিত উপকারী। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ত্বকে অলিভ অয়েল ব্যবহারে কোনও ক্ষতি নেই। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও বিশেষত যাদের ত্বকে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব রয়েছে এটি তাদের ব্রণ বৃদ্ধি করতে পারে।

Related posts

Leave the first comment